ডুয়ার্সের ” কোচবিহার বা কুচবিহার ”(অফবিট ডেস্টিনেশান) :-
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর -পূর্বে ,পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তর বঙ্গের একটি বৃহত্তম পরিকল্পিত শহর। শিলিগুড়ি থেকে এর দূরত্ব প্রায় 172 কিমি এবং আলিপুরদুয়ার থেকে এর দূরত্ব প্রায় 95 কিমি। শীতল জলবায়ু, সমৃদ্ধ বনভূমি এবং প্রাণীজগৎ সমৃদ্ধ কোচবিহার নামক গন্তব্যটি জয়পুরের তৃতীয় মহারানী গায়েত্রী দেবীর মাতৃভূমি। বহুশতাব্দী ধরে এই গন্তব্যটিতে আদিবাসী কোচ বা রাজবংশী উপজাতি বসবাস করত, তাই কোচবিহার নামকরণ হয়েছে ।এর অনেক আকর্ষণ রয়েছে। এই ঐতিহাসিক শহরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহু ঐতিহাসিকদের কুচবিহারের দিকে উৎসাহিত করেছে ।এর বিখ্যাত কুচবিহার রাজপ্রাসাদ বা রাজবাড়ীটি একটি উল্লেখযোগ্য আইকনিক ল্যান্ডমার্ক। 1887 সালে রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ন ভূপ বাহাদুরের নেতৃত্বে নির্মিত ভিক্টর জুবিলি প্রাসাদটি ইতালীয় পুনর্জাগরন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসের মডেলটিতে নকশাকৃত। বিশিষ্ট স্থাপত্য শৈলীর সাথে মুঘল শৈলীর সংমিশ্রণে ইন্দো – স্যারাসেনিক পুনর্জীবন সংগ্রহশালায় বিশালাকার কোচবিহার প্রাসাদ নির্মিত হয়েছিল।2002 সালে প্রাসাদের অভ্যন্তরে একটি স্হানীয় জাদুঘর স্থাপন করা হয়েছে,যা স্হানীয় মানুষদের সংস্কৃতি এবং কুচবিহারের রাজকীয়তাকে চিত্রিত করে। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব ছাড়াও, কুচবিহার অনেক ভক্তদের তীর্থস্থান। এই প্রাসাদের অল্প হাঁটার দূরত্বেই রয়েছে মদন মোহনের ঐতিহাসিক এবং অন্যতম পবিত্র মন্দির। মদন মোহন কোচ কিংসের কূল দেবতা। 1889 সালে কোচ রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ন এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। এই গন্তব্যটির 10 কিমির মধ্যে রয়েছে 400 বছরের ও বেশী পুরোনো একটি পবিত্র মন্দির, যা ভগবান শিবের বাণেশ্বর মন্দির নামে পরিচিত। মন্দিরের নিকটবর্তী হ্রদটি বেশ কয়েক দশক পুরোনো অনেক কচ্ছপের আবাস। এখান থেকে দেড় ঘন্টা দূরত্বে অবস্থিত প্রশান্ত হ্রদটি রসিক বিল নামে পরিচিত। রসিক বিলে পাখি যেমন -পোকার্ড, হুইসলিং টিল, পিনটাইল, উইগন হাঁস প্রভৃতি বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের সমাগম রয়েছে। এটি পাখি পর্যবেক্ষকদের কাছে একটি স্বর্গরাজ্যতুল্য মনে হবে। হ্রদের পাশে একটি হরিণ পার্ক এবং কুমির পুনর্বাসন কেন্দ্র, একটি চিতাবাঘ ঘর, একটি অজগর ঘর, অ্যাভিয়ারি এবং একটি কচ্ছপ উদ্ধার কেন্দ্র রয়েছে। অল টাইম এখানকার চা্রমিং সিজেনটাইম, তবে উৎসবের সময় বেশী আকর্ষণীয়।
ReplyForward |